জ্যাম আর জ্যামের অসহনীয় দুর্ভোগের কথা বোঝাতে
শুধু ঢাকা শহরের নাম নিলেই হবে। মাইলের পর মাইল গাড়ির দীর্ঘ সারি যেভাবে
নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকে, তাতে মনে হয় পথেই কেটে যাবে অনন্তকাল!
সত্যি সত্যিই যদি এমন হয়, কোনো
এক ব্যস্ত দিনে বাস-গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছেন! সেই লাইনও মাইল পাঁচেকের
কম নয়। সবাই ইঞ্জিন বন্ধ করে অপেক্ষা করছে কখন কাটবে এই বন্দিদশা। কিন্তু
সেই অপেক্ষা আর শেষ হয় না।
এভাবেই কেটে গেল একদিন, দু’দিন, এক
সপ্তাহ, একমাস। যেখানকার জ্যাম সেখানেই আছে। এর মধ্যেই আটকাপড়া একটি
প্রাইভেট কারের মেয়ের সঙ্গে প্রেম হলো এক বাসযাত্রী ছেলের। সেই প্রেমও চলল
বছর দু’য়েক। ওই জ্যামের আশেপাশে ঘুরে ঘুরে তারা প্রেম করে। স্বপ্ন দেখে,
একদিন এই জ্যাম কেটে যাবে আর তারা সাজাবে তাদের সুখের সংসার।
কিন্তু দিন যায়, জ্যাম কাটে না। শেষে সবার সিদ্ধান্তে সেখানেই তারা বিয়ে
করার সিদ্ধান্ত নিল। মেয়ের গাড়িতে সাজানো হলো বাসর ঘর। বছর ঘুরতেই তাদের
কোল আলো করে ফুটফুটে দেবশিশু। যুগ পার হয়, জ্যাম সেখানেই থেকে যায়।
শিশু তখন কিশোর থেকে তরুণ, তরুণ থেকে যত বড় হয়, সেই প্রেমিক যুগল হয় বুড়ো।
এভাবে একযুগ, দুইযুগ, বছর এখন ৭০। ততদিনে তারা গত হয়েছেন, ঠিক একই জায়গায়
এখন তাদের ছেলে-ছেলেবউ। তাদেরও বড় বড় ছেলেপুলে। বয়স হয়েছে, কিন্তু অপেক্ষা
কাটেনি। প্রজন্ম ঘুরে অপেক্ষা এখন নতুনের চোখে। কিন্তু সেই জ্যাম এতটুকু
নড়েনি, ঠিক সেখানেই আছে!
হ্যাঁ, অতি কাল্পনিক গল্প এটি। তবে গল্পের কাহিনী কাল্পনিক হলেও, ঘটনাটি সত্যি।
৭০ বছরের পুরনো জ্যামটি লেগেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
সময়। বেলজিয়ামের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থান নিয়েছিল মার্কিন সেনাদল। সেসময় তাদের ছেড়ে যাওয়া গাড়ির দীর্ঘ জ্যামটি এখনও লেগে আছে বর্তমান বেলজিয়ামের একটি বনে।
সময়। বেলজিয়ামের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থান নিয়েছিল মার্কিন সেনাদল। সেসময় তাদের ছেড়ে যাওয়া গাড়ির দীর্ঘ জ্যামটি এখনও লেগে আছে বর্তমান বেলজিয়ামের একটি বনে।
প্রাচীন এ জ্যামকে বলা হয় ‘গাড়ির কবরস্থান’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন